খুলনা, বাংলাদেশ | ২০ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৫ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ গ্রেপ্তার
  বগুড়ার শেরপুরে বজ্রপাতে ২ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
  শ্রমবাজার ঘিরে সিন্ডিকেট চায় না বাংলাদেশ : প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা

শিক্ষক-ছাত্র-কর্মকর্তারা সর্বাত্মক আন্দোলনে, অচল দেশের সব কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়

গেজেট ডেস্ক

সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয়’ স্কিমকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে গত সোমবার থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আজ রোববার থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা। তারা আজ রোববার থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে সারাদেশে একযোগে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি (বাংলা ব্লকেড) ঘোষণা করেছে তারা।

পেনশন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও আজ থেকে সর্বাত্মক কর্মাসূচি ঘোষণা করেছে। এতে কার্যত অচল হয়েছে পড়েছে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বিক্ষুব্ধ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন স্থিমিত করতে না পারলে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে সৃষ্টি করবে দীর্ঘমেয়াদের অচলাবস্থা।

দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তদারক সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (চলতি দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহম্মদ আলমগীর মনে করেন, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধে এখনি উদ্যোগ নেয়া জরুরি। অন্যথায় উচ্চশিক্ষায় যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে তা দীর্ঘ মেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামানো বা সমাধান করা কোনোটিই ইউজিসির এখতিয়ারের মধ্যে নেই। শিক্ষকদের বিষয়টি সরাসরি একটি আর্থিক সংক্রান্ত। এটি কেবল সরকারের সিদ্ধান্ত বা পলিসির ব্যাপার। অন্যটি আদালতের ব্যাপার। তাই ইউজিসি চাইলেও এ বিষয়ে সমাধানের কোনো উদ্যোগ নিতে পারে না। তবে শিক্ষাঙ্গনে কোনো অবস্থায় অচলাবস্থা তৈরি হোক সেটা কোনো মতেই কাম্য নয়।

কোটা বিরোধী আন্দোলনে ছাত্ররা

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের লাগাতার আন্দোলন চলছে। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীর শাহবাগ থেকে এক ধরনের কর্মসূচির ঘোষণা এলেও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের মতো করে কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। সে কারণে এবার সব বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা সমন্বিত আন্দোলন শুরু করতে যাচ্ছেন।

আজ রোববার থেকে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সর্বাত্মক ব্লকেড (অবরোধ) পালন করা হবে। এ কর্মসূচির ফলে সব ক্যাম্পাসের সামনের সড়ক অবরোধ করবেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ট্রেন অবরোধেরও ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের দাবিতে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ নামে একটি অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠেছিল। ওই প্ল্যাটফর্ম থেকে আন্দোলন বিষয়ে যে ঘোষণাই এসেছে, শিক্ষার্থীরা তা বাস্তবায়ন করেছেন। তবে ২০২৪ সালে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হলেও সেটি শুধু রাজধানীতে তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ফাহিম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন আজ রোববার থেকে শুধু রাজধানী ঢাকা নয় এর পাশাপাশি বাইরের জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করবে। তিনি আরো বলেন দাবি আদায়ে প্রয়োজনে আমরা হরতালের মতো কর্মসূচি পালন করব। মনে রাখতে হবে এটা শুধু শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নয়, শিক্ষক-অভিভাবকদেরও আন্দোলনে নেমে আসতে হবে।

শিক্ষকদের আজ থেকে আবার কর্মবিরতি

সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয়’ স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরা। বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকলেও কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল শনিবারও অব্যাহত ছিল কর্মবিরতি। তবে আজ রবিবার থেকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করবেন।

এদিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অচলাবস্থা নিয়ে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গত বৃহস্পতিবারের নির্ধারিত বৈঠক শেষ পর্যন্ত হয়নি। বৈঠকটি স্থগিত করার কারণ হিসেবে মন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ততার কথা বলা হয়েছে। কবে নাগাদ এই বৈঠক হতে পারে, সে ব্যাপারেও সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।

আজ রবিবার থেকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করবেন।

কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও আজ থেকে সর্বাত্মক আন্দোলনে

এদিকে সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয়’ স্কিমকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে আজ রোববার থেকে সর্বাত্মক আন্দোলনে নামছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে কর্মবিরতিতে গত সপ্তাহে অর্ধ দিবস অফিস খোলা থাকলেও আজ থেকে সেটিও বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের কাজ আজ থেকে বন্ধ হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!